দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম - দরজার চৌকাঠের দাম

দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে দরজা ঠিকমতো বসবে না, বাঁকা হয়ে যেতে পারে বা ব্যবহারের সময় সমস্যা তৈরি করতে পারে। একটি স্থায়ী ও মজবুত দরজার জন্য চৌকাঠ লাগানোর সময় উপযুক্ত কাঠ, পরিমাপ ও ফিটিং নিশ্চিত করা জরুরি। চৌকাঠের মান ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে কাঠের গুণগত মান এবং ইনস্টলেশনের সঠিক পদ্ধতির ওপর।
দরজার-চৌকাঠ-লাগানোর-নিয়ম
বাজারে দরজার চৌকাঠের দাম কাঠের ধরণ, ডিজাইন ও কারিগরি কাজ অনুযায়ী ভিন্ন হয়। সেগুন, মেহগনি বা গামারি কাঠের চৌকাঠ তুলনামূলক বেশি টেকসই হলেও দামও বেশি। সঠিক কাঠ ও পদ্ধতি নির্বাচন করলে দীর্ঘদিন কোনো সমস্যা ছাড়াই দরজা ব্যবহার করা যায়। সঠিক নিয়ম মেনে লাগানো চৌকাঠ আপনার ঘরের সুরক্ষা ও নান্দনিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম

দরজার স্থায়িত্ব ও সৌন্দর্যের জন্য দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করা জরুরি। একটি শক্তপোক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী চৌকাঠ নিশ্চিত করতে প্রতিটি ধাপে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। নিচে ধাপে ধাপে দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম তুলে ধরা হলো

মাপজোক ও প্রস্তুতি
দরজার ফ্রেমের সঠিক মাপ নিন এবং তা দরজার জন্য উপযুক্ত কিনা যাচাই করুন। কাঠ বা ধাতব ফ্রেমে কোনো বাঁক বা ফাটল আছে কিনা পরীক্ষা করুন। দরজার জন্য নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার ও সমান করুন।

চৌকাঠ বসানোর স্থান প্রস্তুত
দরজা বসানোর স্থানে আগের কাঠামো থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন। ফ্রেম বসানোর স্থান সমান ও সোজা আছে কিনা নিশ্চিত করুন।

চৌকাঠ স্থাপন
চৌকাঠটি স্থানে বসিয়ে পানির লেভেল বা প্লাম্ব বব দিয়ে দেখুন, এটি সোজা আছে কিনা। প্রয়োজনে ছোট কাঠের কীল ব্যবহার করে লেভেল ঠিক করুন।
স্ক্রু বা নাট-বল্টুর
কাঠের চৌকাঠ হলে লম্বা স্ক্রু ও র-ওয়াল প্লাগ ব্যবহার করুন। লোহার চৌকাঠ হলে ওয়েল্ডিং বা শক্তিশালী বল্টু ব্যবহার করুন।

দরজা বসিয়ে চেক
দরজার কবজা লাগিয়ে সেটি ফ্রেমে ফিট করুন। দরজা সহজে খোলে-বন্ধ হয় কিনা পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করুন।

রঙ বা পালিশ করা
কাঠের চৌকাঠ হলে পানি নিরোধক বা উইপোকা প্রতিরোধক রঙ/পলিশ ব্যবহার করুন। লোহার ফ্রেম হলে মরিচা প্রতিরোধী পেইন্ট দিন।

সঠিকভাবে এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে দরজার স্থায়িত্ব, মসৃণতা এবং নান্দনিকতা নিশ্চিত হবে। দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম মানলে দরজা সহজে বাঁকা হবে না এবং মজবুতভাবে স্থায়ী থাকবে। এটি শুধু ঘরের সুরক্ষাই নয়, বরং সৌন্দর্য ও স্থায়িত্বের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দরজার চৌকাঠের দাম

দরজার চৌকাঠের দাম বিভিন্ন উপাদান, কাঠের প্রকার, নকশা এবং প্রস্তুতকারকের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চৌকাঠের মূল্য ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সেগুন কাঠের দরজার দাম সাধারণত ১৫,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়, মেহগনি কাঠের দরজা ৮,০০০ টাকা থেকে পাওয়া যায়, এবং পিভিসি দরজার দাম প্রায় ৬,৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে, দরজার চৌকাঠের দাম কাঠের গুণমান, মাপ ও কারুকার্যের উপর নির্ভর করে ওঠানামা করে। সঠিক মূল্য জানতে স্থানীয় বাজার ও প্রস্তুতকারকদের সাথে যোগাযোগ করা সবচেয়ে ভালো উপায়।

চৌকাঠ কত ইঞ্চি

চৌকাঠ কত ইঞ্চি হবে, তা নির্ভর করে দরজার ধরন ও স্থাপনার প্রয়োজনীয়তার উপর। সাধারণত, এর প্রস্থ ৪.৫ ইঞ্চি থেকে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে এটি আরও কম বা বেশি হতে পারে।

বিভিন্ন মাপের চৌকাঠ:
  • স্ট্যান্ডার্ড চৌকানঃ সাধারণ ঘরের দরজার জন্য ৪.৫ ইঞ্চি থেকে ৫ ইঞ্চি।
  • প্রশস্ত চৌকানঃ বড় দরজা বা প্রধান প্রবেশদ্বারের জন্য ৬ ইঞ্চি থেকে ৭ ইঞ্চি।
  • বিশেষ ডিজাইনের চৌকানঃ কিছু অভ্যন্তরীণ দরজার জন্য ৩.৫ ইঞ্চি বা তার চেয়ে কম।
একটি উপযুক্ত চৌকাঠ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেবল প্রস্থ নয়, এর উচ্চতা ও দৈর্ঘ্যও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, ৭ ফুট উচ্চতা ও ৩ ফুট প্রস্থের দরজার জন্য মানানসই চৌকাঠ ব্যবহৃত হয়। সঠিক মাপ জানা প্রয়োজন হলে, চৌকাঠ কত ইঞ্চি হওয়া উচিত, তা নির্ধারণের জন্য স্থানভেদে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

দেয়ালে দরজার চৌকাঠ কিভাবে লাগানো হয়

দরজার স্থায়িত্ব ও মসৃণ কার্যকারিতার জন্য চৌকাঠ লাগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেয়ালে দরজার চৌকাঠ কিভাবে লাগানো হয় তা জানতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। সঠিক পরিমাপ, লেভেলিং এবং মজবুত সংযোগ নিশ্চিত করলেই দরজাটি নিখুঁতভাবে বসবে।

দেয়ালে দরজার চৌকাঠ লাগানোর ধাপসমূহ

পরিমাপ ও প্রস্তুতি
  • দরজার ফ্রেমের সঠিক মাপ নিন এবং তা দেয়ালের ফাঁকা স্থানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন।
  • কাঠ বা লোহার ফ্রেম হলে ফাটল বা বাঁক আছে কিনা যাচাই করুন।
  • দেয়ালের জায়গাটি সমান ও মসৃণ করে নিন, যাতে চৌকাঠ বসানোর পর ফিটিং নিখুঁত হয়।
ফ্রেম সেটআপ ও লেভেল চেক
  • চৌকাঠটি বসিয়ে পানির লেভেল বা প্লাম্ব বব দিয়ে সোজা আছে কিনা পরীক্ষা করুন।
  • যদি লেভেল ঠিক না থাকে, তবে কাঠের কীল বা পাতলা কাঠের টুকরো ব্যবহার করে ঠিক করুন।
চৌকাঠ ফিক্সিং
  • কাঠের ফ্রেম হলে লম্বা স্ক্রু ও র-ওয়াল প্লাগ ব্যবহার করে মজবুতভাবে লাগান।
  • লোহার ফ্রেম হলে ওয়েল্ডিং বা শক্তিশালী বল্টু দিয়ে সেট করুন।
  • লাগানোর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, যেন এটি স্থিরভাবে বসে যায়।
ফাঁকা স্থান পূরণ ও ফিনিশিং
  • ফ্রেমের চারপাশের ফাঁকা স্থান সিমেন্ট, প্লাস্টার বা ফোম দিয়ে ভরাট করুন।
  • এটি পুরোপুরি শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় দিন।
  • শুকিয়ে গেলে দরজা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করুন।
সঠিকভাবে দেয়ালে দরজার চৌকাঠ লাগানো হলে এটি বহুদিন টেকসই থাকবে এবং দরজার স্থায়িত্ব নিশ্চিত হবে। ভুল দরজার লাগানোর ফিটিং এবং নড়াচড়া সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, তাই প্রতিটি ধাপ যত্নসহকারে অনুসরণ করা জরুরি। ভালো উপকরণ এবং নিখুঁত কারিগরির মাধ্যমে মজবুত চৌকাঠ লাগানো সম্ভব।

দরজার চৌকাঠের নিচের অংশকে কি বলে

দরজার নিচের ফাঁকা অংশ বন্ধ রাখতে এবং কাঠামোর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে বিশেষ একটি অংশ ব্যবহৃত হয়। দরজার চৌকাঠের নিচের অংশকে কি বলে—এই প্রশ্নের উত্তর হলো "সিল" (Sill) বা "থ্রেশহোল্ড" (Threshold)। এটি শুধু দরজার নান্দনিকতা বৃদ্ধি করে না, বরং কার্যকর সুরক্ষা প্রদানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দরজার-চৌকাঠ-লাগানোর-নিয়ম
সিল বা থ্রেশহোল্ডের প্রধান ভূমিকা
  • জলরোধী সুরক্ষা: বৃষ্টির পানি, ধুলোবালি বা বাইরের আর্দ্রতা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করা রোধ করতে সাহায্য করে।
  • তাপ ও শব্দ নিরোধ: বাইরের ঠাণ্ডা বা গরম বাতাস ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়, পাশাপাশি শব্দ নিরোধক হিসেবেও কাজ করে।
  • দরজার স্থিতিশীলতা: দরজার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং সহজে খোলা-বন্দ করার সুবিধা নিশ্চিত করে।
সিল বা থ্রেশহোল্ড বিভিন্ন উপাদানের ভিত্তিতে তৈরি হতে পারে, যেমন কাঠ, পাথর, ধাতু বা পিভিসি। স্থাপনার ধরন অনুযায়ী কিছু সিল সমতল থাকে, আবার কিছু উঁচু করে ডিজাইন করা হয় যাতে অতিরিক্ত সুরক্ষা পাওয়া যায়। সঠিক উপাদান ও ডিজাইন নির্বাচন করলেই দরজার চৌকাঠের নিচের অংশ আরও কার্যকরভাবে ঘরের সুরক্ষা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পারে।

দরজার চৌকাঠ কখন লাগাতে হয়

দরজার স্থাপনার ক্ষেত্রে দরজার চৌকাঠ কখন লাগাতে হয় তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মূলত নির্মাণের ধাপ, উপকরণের ধরন এবং কাঠামোর শক্তিশালী ভিত্তির ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিক সময়ে চৌকাঠ বসানো না হয়, তবে ভবিষ্যতে দরজার স্থিতিশীলতা ও কার্যকারিতায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন।
নতুন নির্মাণের ক্ষেত্রে, দেওয়াল তৈরি ও প্লাস্টার সম্পন্ন হওয়ার পর চৌকাঠ বসানো উচিত। তবে কিছু ক্ষেত্রে, দেওয়াল তৈরির সময়ই চৌকাঠ বসিয়ে সেটিকে ইট বা কংক্রিট দিয়ে শক্ত করা হয়। পুরানো চৌকাঠ যদি নষ্ট হয়ে যায় অথবা নতুন দরজার মাপের সঙ্গে না মেলে, তবে এটি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। দরজা বদলানোর আগে চৌকাঠ ঠিকভাবে বসানো হয়েছে কিনা এবং লেভেল ঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। ফিনিশিং বা রঙের কাজের পরিপূর্ণতার জন্যও চৌকাঠ লাগানোর সময় নির্ধারণ করা হয়, যা প্রয়োজন অনুযায়ী দেওয়ালের রঙ বা ফিনিশিংয়ের আগে বা পরে হতে পারে।

সঠিক সময়ে দরজার চৌকাঠ কখন লাগাতে হয় তা নিশ্চিত করলে দরজার ফিটিং নিখুঁত হবে এবং এর দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত হবে। তাই, যথাযথ পরিকল্পনা এবং সময়মতো চৌকাঠ লাগানো দরজার স্থিতিশীলতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

দরজার চৌকাঠ ঠিক করার পদ্ধতি

দরজার চৌকাঠ ঠিক করার পদ্ধতি কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। সঠিকভাবে চৌকাঠ ঠিক না করা হলে, দরজার কার্যকারিতা ও স্থিতিশীলতা কমে যেতে পারে। এজন্য দরজার চৌকাঠ ঠিক করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি।

পরিমাপ ও প্রস্তুতি
প্রথমে দরজার ফ্রেমের সঠিক মাপ নিয়ে চেক করুন এবং তা দেয়ালের ফাঁকা স্থান সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন। দেয়ালের জায়গা সমান ও মসৃণ করুন, যাতে চৌকাঠ বসানোর পর কোনো ফাঁকা জায়গা না থাকে। যদি ফ্রেম কাঠ বা লোহার হয়, তবে তার কোনো ফাটল বা বাঁক আছে কিনা যাচাই করুন।

ফ্রেম স্থাপন ও লেভেল চেক
চৌকাঠটি স্থানে বসিয়ে পানির লেভেল বা প্লাম্ব বব ব্যবহার করে সোজা আছে কিনা পরীক্ষা করুন। যদি প্রয়োজন হয়, কাঠের কীল বা পাতলা কাঠের টুকরো দিয়ে লেভেল ঠিক করুন।

চৌকাঠ ফিক্সিং
যদি কাঠের চৌকাঠ হয়, তবে লম্বা স্ক্রু এবং র-ওয়াল প্লাগ ব্যবহার করে সেটিকে পাকা করে দিন। লোহার চৌকাঠ হলে, ওয়েল্ডিং বা বল্টু দিয়ে শক্তভাবে সেট করুন। চৌকাঠ বসানোর পর কিছু সময় রেখে দেখুন যেন এটি সোজা থাকে এবং কোনো দিক হেলে না যায়।

ফাঁকা স্থান পূরণ ও ফিনিশিং
ফ্রেমের চারপাশের ফাঁকা জায়গা সিমেন্ট, প্লাস্টার বা ফোম দিয়ে ভরাট করুন। এটি ভালোভাবে শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে দরজা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করুন।

সঠিকভাবে চৌকাঠ ঠিক করা দরজার স্থিতিশীলতা এবং কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী করে, তাই এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা উচিত। দরজার চৌকাঠ ঠিক করার পদ্ধতি মেনে দরজার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

দরজার চৌকাঠ সোজা করার উপায়

দরজার চৌকাঠ সোজা করার উপায় সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে দরজা বন্ধ বা খোলার সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। চৌকাঠ যদি বাঁকা হয়ে যায় বা কাত হয়ে বসে, তাহলে দরজার ফিটিং ঠিকমতো হয় না এবং ব্যবহারের অসুবিধা সৃষ্টি করে। তাই দরজার স্থিতিশীলতা ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন।

পরিমাপ ও যাচাই
প্রথমেই দরজার চৌকাঠের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করুন। একটি লেভেল মিটার বা প্লাম্ব বব ব্যবহার করে চৌকাঠ সোজা আছে কিনা পরীক্ষা করুন। যদি কোনো অংশ বাঁকা বা উঁচু-নিচু থাকে, তাহলে সেটি চিহ্নিত করুন।

কাঠের কীল ব্যবহার
যদি চৌকাঠ কিছুটা হেলে যায়, তাহলে কাঠের কীল ব্যবহার করে ধাপে ধাপে লেভেল ঠিক করুন। কীলগুলো চৌকাঠের নিচের অংশে এবং পাশের ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে ধীরে ধীরে লেভেল মিলিয়ে নিন।

স্ক্রু ও বল্টু দিয়ে শক্ত করা
চৌকাঠ যদি আলগা হয়ে যায়, তাহলে লম্বা স্ক্রু বা বল্টু ব্যবহার করে সেটিকে শক্তভাবে ফ্রেমের সঙ্গে যুক্ত করুন। প্রয়োজনে র-ওয়াল প্লাগ ব্যবহার করে শক্তি বাড়ানো যেতে পারে।

ফাঁকা স্থান পূরণ
চৌকাঠের চারপাশে থাকা ফাঁকা স্থান সিমেন্ট, ফোম বা কাঠের টুকরো দিয়ে ভরাট করুন। এটি চৌকাঠকে শক্তভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করবে এবং বাঁকা হয়ে যাওয়া রোধ করবে।

চূড়ান্ত লেভেল পরীক্ষা
সব কিছু স্থাপন ও মজবুত করার পর আবারও লেভেল মিটার ব্যবহার করে চৌকাঠের স্থিরতা যাচাই করুন। দরজাটি খোলার ও বন্ধ করার সময় সহজভাবে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।

সঠিকভাবে দরজার চৌকাঠ সোজা করার উপায় অনুসরণ করলে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান পাওয়া সম্ভব। একটি সোজা ও স্থিতিশীল চৌকাঠ শুধু দরজার কার্যকারিতাই নিশ্চিত করে না, বরং ঘরের সৌন্দর্যও বাড়িয়ে তোলে।

গহ্বর ইটের দেয়ালে দরজার ফ্রেম বেঁধে দেওয়ার দুটি পদ্ধতি কী

গহ্বর ইটের দেয়ালে দরজার ফ্রেম স্থাপন করলে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী দরজা নিশ্চিত করা যায়। তবে, এটি সঠিকভাবে না করলে দরজার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। নিচে গহ্বর ইটের দেয়ালে দরজার ফ্রেম বেঁধে দেওয়ার দুটি পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:

স্ক্রু ও র-ওয়াল প্লাগ পদ্ধতি
  • দরজার ফ্রেমের নির্দিষ্ট স্থানে ড্রিল করে র-ওয়াল প্লাগ এবং উপযুক্ত স্ক্রু ব্যবহার করা হয়।
  • এটি সাধারণত কাঠ ও মেটাল ফ্রেমের ক্ষেত্রে কার্যকর এবং ইটের গহ্বরে শক্তভাবে আটকে থাকে।
  • ইনস্টলেশনের পর চারপাশ ফোম, সিমেন্ট বা প্লাস্টার দিয়ে সিল করা হয়, যা ফ্রেমের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
গহ্বর টাই বা গ্রাউট ফিক্সিং পদ্ধতি
  • ইটের ফাঁকা অংশে গ্রাউট বা বিশেষ সিমেন্ট ঢেলে ফ্রেম শক্তভাবে বসানো হয়।
  • ইস্পাতের টাই বা লোহার রড ব্যবহার করে ফ্রেমটি দেয়ালের সঙ্গে স্থায়ীভাবে যুক্ত করা হয়।
  • ভারী দরজার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কার্যকর, কারণ এটি অতিরিক্ত ওজন সহজে বহন করতে পারে।
গহ্বর ইটের দেয়ালে দরজার ফ্রেম স্থাপনের সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে দরজাটি টেকসই ও স্থিতিশীল থাকবে। উপযুক্ত পদ্ধতি বেছে নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো নিশ্চিত করুন।

দরজার চৌকাঠ কিভাবে বর্গাকার করা যায়

দরজার চৌকাঠ কিভাবে বর্গাকার করা যায় তা জানতে হলে সঠিক পরিমাপ ও স্থাপনের নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি। প্রথমেই দরজার চৌকাঠের প্রতিটি কোণ ৯০ ডিগ্রি কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। একটি টেপ মেজার দিয়ে বিপরীত দুই কোণের দৈর্ঘ্য মেপে দেখতে হবে, যদি সমান না হয়, তবে তা সমন্বয় করা প্রয়োজন। কাঠের স্কয়ার বা কার্পেন্টার স্কয়ার ব্যবহার করে দরজার চৌকাঠ বর্গাকার কিনা তা যাচাই করা যেতে পারে।
দরজার-চৌকাঠ-লাগানোর-নিয়ম
চৌকাঠ যদি বাঁকা থাকে, তবে কাঠ বা ধাতব ফ্রেম দিয়ে ঠিক করতে হবে এবং স্ক্রু বা ক্ল্যাম্পের মাধ্যমে সেটিকে সোজা করতে হবে। দরকার হলে কাঠের কীল ব্যবহার করে ভারসাম্য স্থাপন করা যেতে পারে। একবার ফ্রেম সঠিকভাবে বসে গেলে সিমেন্ট, ফোম বা প্লাস্টার দিয়ে চারপাশ সিল করে ইনস্টলেশন সম্পন্ন করতে হবে। দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করলে এটি দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত হবে এবং দরজার খোলামেলা চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।

দরজার চৌকাঠ সরে যাওয়ার কারণ কি

দরজার চৌকাঠ সরে যাওয়ার কারণ সাধারণত কাঠামোগত ত্রুটি, পরিবেশগত পরিবর্তন এবং নিম্নমানের ইনস্টলেশনের ওপর নির্ভর করে। যদি চৌকাঠ বসানোর সময় পর্যাপ্তভাবে সমর্থন না দেওয়া হয় বা স্ক্রু ও ফাস্টেনার ঠিকমতো স্থাপন না করা হয়, তবে এটি সহজেই স্থানচ্যুত হতে পারে। আর্দ্রতা এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে কাঠের চৌকাঠ ফুলে উঠতে বা সংকুচিত হতে পারে, যা সময়ের সাথে সাথে চৌকাঠকে বিকৃত করে ফেলে।
ভূমিকম্প, ভারী ঝাঁকুনি বা ঘরের কাঠামো বসে যাওয়ার মতো কারণেও দরজার চৌকাঠ সরে যাওয়ার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, যদি ফ্রেমটি ঠিকমতো লেভেল না করে বসানো হয় বা দরজার ওজন সঠিকভাবে বিতরণ না করা হয়, তবে এটি একদিকে ঢলে পড়তে পারে। নরম মাটি বা বেজমেন্টের কাঠামোগত দুর্বলতাও দীর্ঘমেয়াদে চৌকাঠের স্থায়িত্বে প্রভাব ফেলে।

উপসংহার

দরজার চৌকাঠ লাগানোর নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করলে ফ্রেমটি হবে মজবুত, টেকসই এবং স্থিতিশীল। সঠিক পরিমাপ, লেভেল ঠিক রাখা ও শক্তভাবে সংযোগ করা অত্যন্ত জরুরি। ইনস্টলেশনের পর ফিনিশিং ও সিলিং করলে ফ্রেমের স্থায়িত্ব আরও বাড়বে। চৌকাঠের গুণগত মান ও দরজার চৌকাঠের দাম নির্ভর করে ব্যবহৃত উপাদান ও ইনস্টলেশনের জটিলতার ওপর। কাঠ, ধাতু বা পিভিসি—যে ধরনের ফ্রেমই হোক, সঠিক নিয়ম মেনে লাগানোই দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের মূল চাবিকাঠি। নিখুঁতভাবে চৌকাঠ বসালে দরজার কার্যকারিতা উন্নত হবে এবং দীর্ঘদিন কোনো সমস্যা হবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

AllWoodFixes নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url